Dhaka: +88028835174-6; Chattogram: +88 09678 677 688

BARRISTERS | ADVOCATES | LEGAL CONSULTANTS

স্বামী পরকীয়া করছে / Extra-Marital Affair

Published by  The Daily Prothom Alo  November 18, 2020. (Link Here)

আমার শ্যালিকার বয়স ১৯। এইচএসসি পরীক্ষার্থী। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তারা ছয় বোন। বিভিন্ন কারণে তাকে ১৫ বছর বয়সে বিয়ে দিতে হয়েছে দুই বোনকে ডিঙিয়ে। পিতা কন্যাদায়গ্রস্ত। তার অসহায়ত্বের জন্য আমাদের কিছু করার ছিল না। ছেলে প্রবাসী। বিয়ে হয়েছে, কিন্তু বয়স কম থাকায় রেজিস্ট্রেশন পূর্ণাঙ্গভাবে করা হয়নি। ছেলে বিদেশে থাকায় তার পরিবারের মেয়ে অপছন্দ হওয়ায় কিছু মনোমালিন্য হয়। তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন শাশুড়ি ও ননদ। পরে মেয়েটি বাবার বাড়ি চলে আসে, পড়ালেখা চালিয়ে যায়। তার শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনো ভরণপোষণ দেয় না এবং খোঁজও নেইনি। সে এসএসসি পাশ করে।

এবার করোনার জন্য পরীক্ষা দেওয়া হয়নি মেয়েটির। এরই মধ্যে তার বর দেশে আসে। সমাজের গণ্যমান্য মানুষ ও বরের অভিভাবকেরা দায়িত্ব নিয়ে তাকে ছেলের বাড়িতে নিয়ে যান। শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পর সে সন্তানসম্ভবা হয়। কিন্তু ছেলে আরেক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত। সেই মেয়ের সংসার ও বাচ্চা আছে। তাঁর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা রকম নগ্ন ছবি আদান-প্রদান করে, যার প্রমাণ আছে একাধিক। ছেলের পরিবারকে জানানো হলে তাঁরা তাকে শাসন করেন, কিন্তু সে ওই পথ থেকে এখনো ফেরেনি। এ ক্ষেত্রে কোথায় বা কীভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যায়? ছেলেটি শিগগিরই আবার বিদেশ চলে যাবে।
খোকন

পরামর্শ: বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা না থাকলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্ব পারিবারিক জীবনে অপরিসীম। আমাদের দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ নারীদের জন্য। বিয়ে–সম্পর্কিত কোনো জটিলতা বা প্রমাণের প্রশ্ন উঠলে এই রেজিস্ট্রেশনই প্রমাণপত্র হিসেবে কাজ করে। দেনমোহর, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের পিতৃত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রি করা কাবিননামা একটি আইনগত দলিল। মুসলিম আইনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) না করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। তবে বিয়েটি বাতিল বলে গণ্য হবে না। কাজেই এই বিয়ে বৈধ।

ভরণপোষণ দেওয়া স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্ব এবং এটি স্ত্রীর আইনগত অধিকার। বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য থাকা-খাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ, চিকিৎসা ও জীবনধারণের জন্য যা যা লাগবে, স্বামীর কাছ থেকে তা পাওয়ার অধিকার স্ত্রীর আছে। এই অধিকার স্ত্রী যখন স্বামীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকবে, তখন তো থাকবেই, তেমনি বিবাহবিচ্ছেদের পরও তা সীমিত অধিকার এবং সীমাবদ্ধ সময় পর্যন্ত বহাল থাকে।

১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভরণপোষণের জন্য স্ত্রীর মামলা করার অধিকার আছে। এটি একটি দেওয়ানি প্রতিকার।

১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৯ ধারায় বলা আছে, স্বামী স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে স্ত্রী স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে এ বিষয়ে আবেদন করতে পারবেন। চেয়ারম্যান সালিসি পরিষদ গঠন করে ভরণপোষণের পরিমাণ ঠিক করবেন এবং সার্টিফিকেট ইস্যু করবেন। স্বামী এরপরও নির্ধারিত ভরণপোষণ না দিলে স্ত্রী বকেয়া ভূমি রাজস্বের আকারে তা আদায় করতে পারবেন।

আপনার শ্যালিকা যদি বিবাহ বিচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেন, সে ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে তালাকের নোটিশ দিতে হবে। যে তারিখে নোটিশ পৌঁছাবে, সে দিন থেকে ৯০ দিন পর বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক কার্যকর হবে। নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সালিসের কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলেও তালাক কার্যকর বলে গণ্য হবে। তবে স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে গর্ভকাল শেষ হওয়ার পর তালাক কার্যকর হবে। যেহেতু তিনি সন্তানসম্ভবা, সেহেতু সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার তাঁর আছে। দেনমোহরের টাকা পাওয়ার অধিকারও তাঁর আছে।

স্বামী অন্য সম্পর্কে লিপ্ত হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি কোনো প্রতিকার তিনি পাবেন না। তবে প্রতারণার মামলা করতে পারবেন। এ ছাড়া শাশুড়ি ও ননদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের জন্য পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন–২০১০-এর অধীনে প্রতিকার পেতে পারেন।

স্বামী পরকীয়া করছে / Extra-Marital Affair

স্বামী পরকীয়া করছে / Extra-Marital Affair

স্বামী পরকীয়া করছে / Extra-Marital Affair

Best law Firm in Bangladesh, Legal Counsel, Best Lawyers in Bangladesh, Laws of Bangladesh, Extra-marital affair, divorce, divorce law, married registration, maintenance,

Article

Mountain peace is democracy

পাহাড়ের শান্তি | জনতন্ত্র গণতন্ত্র | https://youtu.be/QgGcvRGD_Ak Women and girls are victims of torture Women and girls are victims of

Read More »

স্বামী পরকীয়া করছে / Extra-Marital Affair

Published by  The Daily Prothom Alo  November 18, 2020. (Link Here)

আমার শ্যালিকার বয়স ১৯। এইচএসসি পরীক্ষার্থী। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তারা ছয় বোন। বিভিন্ন কারণে তাকে ১৫ বছর বয়সে বিয়ে দিতে হয়েছে দুই বোনকে ডিঙিয়ে। পিতা কন্যাদায়গ্রস্ত। তার অসহায়ত্বের জন্য আমাদের কিছু করার ছিল না। ছেলে প্রবাসী। বিয়ে হয়েছে, কিন্তু বয়স কম থাকায় রেজিস্ট্রেশন পূর্ণাঙ্গভাবে করা হয়নি। ছেলে বিদেশে থাকায় তার পরিবারের মেয়ে অপছন্দ হওয়ায় কিছু মনোমালিন্য হয়। তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন শাশুড়ি ও ননদ। পরে মেয়েটি বাবার বাড়ি চলে আসে, পড়ালেখা চালিয়ে যায়। তার শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনো ভরণপোষণ দেয় না এবং খোঁজও নেইনি। সে এসএসসি পাশ করে।

এবার করোনার জন্য পরীক্ষা দেওয়া হয়নি মেয়েটির। এরই মধ্যে তার বর দেশে আসে। সমাজের গণ্যমান্য মানুষ ও বরের অভিভাবকেরা দায়িত্ব নিয়ে তাকে ছেলের বাড়িতে নিয়ে যান। শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পর সে সন্তানসম্ভবা হয়। কিন্তু ছেলে আরেক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত। সেই মেয়ের সংসার ও বাচ্চা আছে। তাঁর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা রকম নগ্ন ছবি আদান-প্রদান করে, যার প্রমাণ আছে একাধিক। ছেলের পরিবারকে জানানো হলে তাঁরা তাকে শাসন করেন, কিন্তু সে ওই পথ থেকে এখনো ফেরেনি। এ ক্ষেত্রে কোথায় বা কীভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যায়? ছেলেটি শিগগিরই আবার বিদেশ চলে যাবে।
খোকন

পরামর্শ: বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা না থাকলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্ব পারিবারিক জীবনে অপরিসীম। আমাদের দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ নারীদের জন্য। বিয়ে–সম্পর্কিত কোনো জটিলতা বা প্রমাণের প্রশ্ন উঠলে এই রেজিস্ট্রেশনই প্রমাণপত্র হিসেবে কাজ করে। দেনমোহর, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের পিতৃত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রি করা কাবিননামা একটি আইনগত দলিল। মুসলিম আইনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) না করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। তবে বিয়েটি বাতিল বলে গণ্য হবে না। কাজেই এই বিয়ে বৈধ।

ভরণপোষণ দেওয়া স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্ব এবং এটি স্ত্রীর আইনগত অধিকার। বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য থাকা-খাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ, চিকিৎসা ও জীবনধারণের জন্য যা যা লাগবে, স্বামীর কাছ থেকে তা পাওয়ার অধিকার স্ত্রীর আছে। এই অধিকার স্ত্রী যখন স্বামীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকবে, তখন তো থাকবেই, তেমনি বিবাহবিচ্ছেদের পরও তা সীমিত অধিকার এবং সীমাবদ্ধ সময় পর্যন্ত বহাল থাকে।

১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভরণপোষণের জন্য স্ত্রীর মামলা করার অধিকার আছে। এটি একটি দেওয়ানি প্রতিকার।

১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৯ ধারায় বলা আছে, স্বামী স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে স্ত্রী স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে এ বিষয়ে আবেদন করতে পারবেন। চেয়ারম্যান সালিসি পরিষদ গঠন করে ভরণপোষণের পরিমাণ ঠিক করবেন এবং সার্টিফিকেট ইস্যু করবেন। স্বামী এরপরও নির্ধারিত ভরণপোষণ না দিলে স্ত্রী বকেয়া ভূমি রাজস্বের আকারে তা আদায় করতে পারবেন।

আপনার শ্যালিকা যদি বিবাহ বিচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেন, সে ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে তালাকের নোটিশ দিতে হবে। যে তারিখে নোটিশ পৌঁছাবে, সে দিন থেকে ৯০ দিন পর বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক কার্যকর হবে। নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সালিসের কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলেও তালাক কার্যকর বলে গণ্য হবে। তবে স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে গর্ভকাল শেষ হওয়ার পর তালাক কার্যকর হবে। যেহেতু তিনি সন্তানসম্ভবা, সেহেতু সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার তাঁর আছে। দেনমোহরের টাকা পাওয়ার অধিকারও তাঁর আছে।

স্বামী অন্য সম্পর্কে লিপ্ত হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি কোনো প্রতিকার তিনি পাবেন না। তবে প্রতারণার মামলা করতে পারবেন। এ ছাড়া শাশুড়ি ও ননদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের জন্য পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন–২০১০-এর অধীনে প্রতিকার পেতে পারেন।