Dhaka: +88028835174-6; Chattogram: +88 09678 677 688

BARRISTERS | ADVOCATES | LEGAL CONSULTANTS

এত সাহস পায় কোথায়

এত সাহস পায় কোথায় /The reasons behind committing rape


Published by  The Daily Prothom Alo  November 03, 2020. (Link Here)

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সংশোধিত ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০’ অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও দেশে ধর্ষণের ঘটনা কমছে না, বরং বাড়ছে। শিশু ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও ধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনা ক্রমে গ্রাস করছে আমাদের সমাজকে। অনেক ঘটনার সঙ্গেই পরিচিতজনেরা জড়িত।

নারী ও শিশু ধর্ষণের অনেক তথ্য-উপাত্ত প্রকাশিত। বাংলাদেশে প্রতি ২১ মিনিটে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হন। প্রকৃত সংখ্যাটা এর চেয়ে অনেক বেশি, কেননা, অধিকাংশ ঘটনাই লোকলজ্জায় কিংবা সমাজের চাপে দৃষ্টিগোচরে আনা হয় না। যৌন নির্যাতন যে শুধু স্বল্পশিক্ষিত বা পড়াশোনা না জানা পুরুষেরাই করছেন তা নয়, উচ্চশিক্ষিত কিংবা পেশাজীবী, এমনকি নিকটাত্মীয়ও—কেউ বাদ যাচ্ছেন না।

ধর্ষিত হচ্ছেন ছাত্রী, শিশু, যুবতী, গৃহবধূ, পোশাককর্মী। গভীর রাতে, প্রকাশ্য দিবালোকে, রাস্তাঘাটে, চলন্ত বাসে, স্কুল–কলেজ–বিদ্যায়তনে ও গৃহে ঘটছে এই পৈশাচিক ঘটনা। বয়স, স্থান–কাল–পাত্রভেদে নির্যাতিত হচ্ছেন নারী। শুধু ধর্ষণই নয়, রীতিমতো গণধর্ষণও হচ্ছে। কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও একের পর এক নারী, শিশু ধর্ষিত হচ্ছে কেন? কোথা থেকে এত সাহস পাচ্ছে নিপীড়কেরা?

যদি মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশের দিকে তাকাই, তাহলে দেখতে পাই, যুগে যুগে দেশে দেশে বিভিন্ন অবয়বে মানবসমাজে নারীরা নিগ্রহের শিকার হয়ে আসছেন। ঘরে-বাইরে, পথে-প্রান্তরে, কর্মক্ষেত্রে—সর্বত্র নারী নির্যাতন আর সহিংসতার শিকার। যুদ্ধবিগ্রহে পুরুষদের বিকৃত লালসার অন্যতম সহজ টার্গেট হয়েছেন নারী। এ সবকিছুর মূলে রয়েছে পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সমাজব্যবস্থা। এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করতে সমাজ, রাষ্ট্রীয় আইন, পরিবার, এমনকি নারীকেও ব্যবহার করা হয়েছে যুগে যুগে। পুরুষশাসিত সমাজ নারীকে কেবল ‘নারী’ হিসেবে গণ্য করে এসেছে, ‘মানুষ’ হিসেবে নয়। সমাজে তাঁকে বিবেচনা করা হয় ভোগ্যপণ্য কিংবা মনোরঞ্জনের সামগ্রী হিসেবে, পরিবারে শুধুই সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র হিসেবে, যুদ্ধক্ষেত্রে ‘লুটের মাল’ হিসেবে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত ‘সামাজিক লিঙ্গরীতি সূচক’ প্রতিবেদনে জানা গেছে সমাজের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ নারীবিদ্বেষী।
 

পুরুষের এই মনোবিকৃতির চূড়ান্ত মাত্রার বহিঃপ্রকাশ ঘটে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের মাধ্যমে। অপরাধীকে সামাজিকভাবে দোষী সাব্যস্ত না করে, সামাজিকভাবে তাদের নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে নিয়ে উল্টো নারীকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এতে করে ধর্ষকেরা প্রশ্রয় পেয়ে যায়।

অনেকেই নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিচারহীনতাকেই দায়ী করেন। কিন্তু শুধু আইন দিয়ে এটি নিরাময় সম্ভব নয়। আমাদের শিশু ও নারীদের ধর্ষণের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে হলে কেবল আইনের কঠোর প্রয়োগে কাজ হবে না। এর জন্য জাতি-ধর্মনির্বিশেষে যার যার অবস্থান থেকে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। দুর্বৃত্তরা যেন প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয় না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে সরকার ও সমাজকে।

কঠোর আইন ধর্ষককে কঠিন বার্তা দেবে। কিন্তু সমাজের সর্বস্তরে যার যার অবস্থান থেকে ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে হবে। স্কুল-কলেজ, ধর্মীয় উপাসনালয়, সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, সমাজের বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের সবাইকে এর বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সমাজের সচেতন নাগরিকদের নীরবতা একজন অপরাধীর স্পর্ধা ও সাহসকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ ও সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। বিচার চাইতে হবে। বিচার না চাইলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ গড়ে না তুললে আগ্রাসনের সংস্কৃতি তৈরি হয়।

লেখক: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী

এত সাহস পায় কোথায়

এত সাহস পায় কোথায়

এত সাহস পায় কোথায়

Best law Firm in Bangladesh, Legal Counsel, Best Lawyers in Bangladesh, Laws of Bangladesh, rape, women, child, rape incident, crime

Article

Blackmail

এক বোন স্বাক্ষর না দিয়ে ব্ল্যাকমেল করছে Published by Prothom Alo | September 25, 2024  (Link Here) প্রশ্ন: আমি মা–বাবার একমাত্র

Read More »
BARRISTER MITI SANJANA

How far is the rule of law established

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা কতদূর Published by DW News | September 21, 2024  (Link Here) পাহাড় অশান্ত হয়ে উঠেছে, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে

Read More »