Published by The Daily Prothom Alo | February 10, 2021 (Link Here)
পাঠকের প্রশ্ন বিভাগে আইনগত সমস্যা নিয়ে নানা রকমের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন পাঠকেরা। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এবার।
প্রশ্ন: আমি ১৯ বছরের মেয়ে। কলেজে পড়ি। একটি ছেলের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল চার বছর। করোনায় হঠাৎ সে আমাকে কিছু না জানিয়ে বিয়ে করেছে। দুই মাস পর জানতে পেরেছি। এই সময়ে সে আমার সঙ্গেও কথা বলে গেছে। আমাদের দুইবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। আমি এখন তার বিরুদ্ধে কেস করতে চাই। মা–বাবাকে জানাতে ভয় লাগছে। কী উপায় আছে আর?
উত্তর: প্রশ্ন থেকে বোঝা যাচ্ছে, একটি ছেলের সঙ্গে আপনার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এখন সে অন্য আরেক মেয়েকে বিয়ে করেছে। আপনি তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চাচ্ছেন। আইনে প্রেমের প্রতারণাবিষয়ক সরাসরি কোনো ধারা বা অনুচ্ছেদ নেই। তবে ভালোবাসার মানুষ যদি আপনার সঙ্গে অর্থ বা সম্পদের জন্য প্রেম করে এবং আপনার বিশ্বাস অর্জন করে, তারপর আপনার অর্থ বা সম্পদ হাতিয়ে নেয় বা অন্য কোনো ক্ষতি করে, তবে তার জন্য আইনি প্রতিকার রয়েছে। তবে আপনার প্রশ্নে সে ধরনের কোনো অভিযোগ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এবং স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে আপনি আবেগ বা রাগের বশবর্তী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে চাচ্ছেন।
আপনি তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বিয়ের প্রলোভন বা প্রতিশ্রুতি দিয়ে একজন পুরুষ সঙ্গী শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে প্রলুব্ধ করে। পরে পুরুষটি যখন তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে না, ঠিক তখনই নারীটি আদালতে গিয়ে ‘ধর্ষণের’ মামলা ঠুকে দেন। এসব ক্ষেত্রে ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছে কি না, এই প্রশ্ন আসে এই কারণে যে এর কোনোটিতেই যদি নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিংবা অমতে, বল প্রয়োগে বা ভীতি প্রদর্শন করে কিংবা ‘বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেছে’ এই মর্মে শঠতা করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করা না হয়, তাহলে এই মামলা টিকবে না। সুতরাং এখানে প্রতারণার অস্তিত্ব থাকলেও বিদ্যমান আইনের আওতায় একে আনা সম্ভব নয়। তবে জারপূর্বক শারীিরক সম্পর্ক বা ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলে ভিন্ন কথা।
মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট হানিফ সেখ বনাম আছিয়া বেগম মামলা, যা ৫১ ডিএলআরের ১২৯ পৃষ্ঠায় এবং অন্য একটি মামলায়, যা ১৭ বিএলটিএর ২৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে যে ১৬ বছরের অধিক বয়সী কোনো মেয়েকে যদি কোনো পুরুষ বিয়ের প্রলোভন দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে তা ধর্ষণের আওতায় আসবে না। কোনো প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ যখন জেনে-বুঝে কোনো শারীরিক সম্পর্কে জড়াবেন, তখন পরবর্তী সময়ে সেই সম্পর্ককে ‘ধর্ষণ’ হিসেবে আদালতের কাছে প্রমাণ করা কঠিন হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের দায়ে প্রতারণার মামলা চলতে পারে। তবে ভিকটিম যদি ১৬ বছরের কম বয়সী হয়, তাহলে সেটিকে ‘ধর্ষণ’ বলা হবে। কারণ, এই বয়সী মেয়ে সম্মতি দেওয়ার মতো সক্ষমতা রাখে না।
যেহেতু আপনি আইনি বিষয় জানতে চাচ্ছেন তাই এই সব বিষয় আপনার বোঝা খুব দরকার। কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে বারবার ভাবতে হবে। কেননা, আবেগ বা রাগের বশবর্তী হয়ে আপনি যদি কোনো মামলা করে ফেলেন এবং তা আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়, সে ক্ষেত্রে আপনাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। কাজেই যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ভালোমতো ভাবুন, নিশ্চিত হোন এবং তারপর ব্যবস্থা নিন। কোনো একটি সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক পক্ষ যদি আর এগোতে না চায়, তবে এ নিয়ে আর জটিলতা না বাড়ানোই ভালো
Muslim Marriages and Divorces (Registration) Act-1974, Divorce law, Divorce, Muslim Marriage Registration, Bangladesh, Kabinnama, Nikahnama
Drop Your Queries
Dhaka Office
Chattogram Office
Dhaka Office Map
Chattogram Office Map