Published by Prothom Alo | August 20, 2022 (Link Here)
Discovering my wife is pregnant after divorce –
প্রশ্ন: ২০২১ সালের জুলাই মাসে পারিবারিকভাবে আমি বিয়ে করি। সবকিছু মোটামুটি ভালোই চলছিল। কিন্তু আঞ্চলিক কিছু রীতি–রেওয়াজ নিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার মা–বাবা ও বোনের বনিবনা হচ্ছিল না। পরে আমার স্ত্রী আমার অনুমতি ছাড়াই তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে বাপের বাড়ি চলে যায়। যাওয়ার আগে আমার মা–বাবার সঙ্গে সে খারাপ আচরণ করে। পরে ফোনে বারবার চলে আসতে বললেও সে আসে না। তার অভিভাবকদের বিষয়টি জানানোর পরও কোনো লাভ হয়নি। সব দিক বিবেচনা করে আমি একজন আইনজীবীর পরামর্শে ফেরত আসার জন্য তাকে নোটিশ পাঠাই। কিন্ত তাঁরা নোটিশ গ্রহণ করেননি। আরও তিন মাস পরে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়ে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে আমি ডিভোর্স নোটিশ পাঠাই। এ সময়ে জানতে পারি সে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তারা নোটিশ ফেরত পাঠায়। এর মধ্যে নানা চেষ্টা করেও তাকে ফেরত আনা যায়নি। ২১ এপ্রিল আমাদের একটি কন্যাসন্তান হয়েছে শুনে আমি হাসপাতালে ছুটে যাই। কিন্তু সেখানে তাদের খুঁজে পাইনি। নানাভাবে কয়েক দিন চেষ্টা করেও তাঁদের কোনো খোঁজ পাই না। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করেছি শুনে শাশুড়ি ফোন করে মেয়েকে দেখে যেতে বলেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আমি মেয়েকে দেখে আসি। এরপর অনেকবার গিয়েছি কিন্তু প্রতিবার শাশুড়ি অপমান করে ফেরত পাঠাতো। স্ত্রীও আসতে চায় না। ওই এলাকার মেয়রও তাঁদের রাজি করাতে না পারায় আমাদের নিজেদেরই ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এ অবস্থায় আমার করণীয় কী?
—নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
উত্তর: নোটিশ পাঠানো, মেয়রের সালিসের উদ্যোগ, সব শেষে তালাক ৯০ দিনের মধ্যে কার্যকর হয়ে যাওয়ার কথা। তবে আপনার স্ত্রী যেহেতু অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন, তাই সেই তালাক কার্যকর হতে গর্ভকাল শেষ হওয়া জরুরি। সেটাও শেষ হয়ে যাওয়ার কথা, যদি না এর মধ্যে সালিসের মাধ্যমে এবং আইন মেনে তা প্রত্যাহার করা হয়।
তালাক দেওয়ার পর তালাকদাতা যদি মনে করেন, তাঁর সিদ্ধান্ত ভুল এবং এই তালাক তিনি বাতিল করতে চান, তাহলে তালাক গ্রহীতার নিকট লিখিত নোটিশ দিয়ে তালাক প্রত্যাহারের বিষয়টি জানাতে হবে। তালাক নোটিশের কপি সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান/সালিসি পরিষদে পাঠানো হলে ওই তালাক প্রত্যাহারের বিষয়টিও তাঁদের লিখিত আকারে বা নির্ধারিত শুনানির তারিখে সশরীর উভয়পক্ষ হাজির হয়ে জানাতে হবে। তালাকদাতা কর্তৃক তালাক বাতিলের বিষয়টি হলফনামার মাধ্যমে স্বীকৃত হতে হবে। আপনার স্ত্রী নোটিশ গ্রহণ করেছেন কি না, তাতে কিছু আসে যায় না। আইনিভাবে প্রত্যাহার না করলে তালাক ইতিমধ্যে কার্যকর হয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে চাইলে কাজির উপস্থিতিতে পুনরায় আপনাকে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে।
অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন ১৮৯০ অনুসারে ১৮ বছরের কম বয়সী সন্তানকে নাবালক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর ওই সন্তানের অভিভাবক হলেন তিনি, যিনি ওই সন্তানের শরীর কিংবা সম্পত্তি অথবা উভয়ের তত্ত্বাবধান ও ভরণপোষণে আইনিভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত।
এই আইন অনুযায়ী নাবালকের স্বাভাবিক এবং আইনি অভিভাবক হলেন পিতা। তবে নাবালকের সার্বিক মঙ্গল ও কল্যাণের গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে প্রচলিত মুসলিম আইন অনুযায়ী সন্তানের মাকে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সন্তানের জিম্মাদারির অধিকার দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত মেয়েশিশুকে মা তাঁর জিম্মায় রাখবেন। সন্তানের জিম্মাদারির নির্দিষ্ট বয়স পার হলেই যে সন্তান বাবার জিম্মায় যাবে, তা নয়। এ সময় অতিক্রম করার পরও সন্তানের সার্বিক কল্যাণ বিবেচনা করে সন্তানের হেফাজত পুনরায় মায়ের ওপর ন্যস্ত হতে পারে।
নাবালক সন্তানের ভরণপোষণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য ব্যাপারে নৈতিক ও অর্থনৈতিক সব সুবিধা প্রদান করা একজন অভিভাবকের দায়িত্ব। সে ক্ষেত্রে আপনাকে এই ভরণপোষণ প্রদান করতে হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের কথা আইনে উল্লেখ করা নেই। আপনি অ্যাকাউন্ট পে চেকের মাধ্যমে বাচ্চার ভরণপোষণের টাকা প্রদান করতে পারেন।
আইন অনুযায়ী আপনার মেয়ে মায়ের হেফাজতেই থাকবে। আপনি আপস-মীমাংসার মাধ্যমে আপনার সন্তানকে নিজের কাছে আনতে পারেন। তবে তাঁরা রাজি না হলে নাবালক সন্তানের জিম্মাদারির জন্য পারিবারিক আদালতের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজের আদালতে আপিল করা যায়। আদালতের মাধ্যমে শিশুর বিষয়ে কোনো আদেশ প্রদান করা হয়ে থাকলে যদি কেউ আদালতের এখতিয়ারের সীমা থেকে তাঁকে সরিয়ে নেন, তাহলে আদালতের আদেশে ওই ব্যক্তি অনূর্ধ্ব এক হাজার টাকা জরিমানা অথবা ছয় মাস পর্যন্ত দেওয়ানি কারাবাস ভোগ করতে বাধ্য থাকবেন। ওই দেওয়ানি কারাবাসের খরচসহ মামলার খরচ, এই আইন মোতাবেক হাইকোর্ট ডিভিশনে প্রণীত কোনো বিধি সাপেক্ষে যে আদালতে মামলাটি চলছে, তার বিবেচনার ওপর নির্ভর করে আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
একজন শিশুর সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য মা এবং বাবা দুজনের ভালবাসারই প্রয়োজন আছে। আশা করি আপনারা দুজনেই সন্তানের সর্বোত্তম কল্যাণের কথা ভেবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসতে পারবেন।
Alternative Dispute Resolution is the most effective means of resolving dispute beyond the court. It is very much effective in reducing the bulk of
LEARN MORE ⇨Drop Your Queries
Dhaka Office
Chattogram Office
Dhaka Office Map
Chattogram Office Map