Dhaka: +88028835174-6; Chattogram: +88 09678 677 688

BARRISTERS | ADVOCATES | LEGAL CONSULTANTS

Marriage registration / বিয়ের রেজিস্ট্রেশন কেন প্রয়োজন?

Divorce Law

Published by Feminist Factor | April 16, 2021  (Link Here)

ব্যারিস্টার মিতি সানজানা।। মুসলিম বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ (নিবন্ধন) আইন, ১৯৭৪ (Muslim Marriage and Divorce (Registration) Act, 1974) – Marriage registration  এর বিধান মতে প্রত্যেকটি বিয়ে নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক এবং এই উদ্দেশ্যে সরকার ম্যারেজ রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেবেন। প্রত্যেক নিকাহ রেজিস্ট্রার সরকারের নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রতিটি বিয়ে এবং তালাক এর পৃথক নিবন্ধন বজায় রাখবেন। আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় একজন নিকাহ রেজিস্ট্রার এর মাধ্যমে বিয়ে রেজিস্ট্রি না করে অনেকেই যেমন কোনো মাওলানা বা হুজুরের মাধ্যমে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করে থাকেন। আইনে বলা আছে মাওলানা বা হুজুরের মাধ্যমে অর্থাৎ ধর্মীয় বিধান মেনে বিয়ে করা হলেও,  সেক্ষেত্রে বর বিয়ে যেদিন হবে সেদিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিস্ট্রার এর কাছে গিয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন। কিন্তু আমরা অনেক ঘটনা দেখতে পাই যেখানে পরবর্তীতে বিয়েটি আর  নিকাহ রেজিস্ট্রার এর মাধ্যমে  রেজিস্ট্রি করা হয় না। বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার দায়িত্ব স্বামীর উপর বর্তায়। তাই স্বামী বিয়ে রেজিস্ট্রি না করলে বা তার দায়িত্ব পালন না করলে দুই বছর পর্যন্ত মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা তিন হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় শাস্তি হতে পারে।

বিয়ে রেজিস্ট্রি না করলে বিয়েটি অবৈধ হয়ে যাবে না। বৈধ বিয়ের ক্ষেত্রে বাবার মৃত্যুর পর সন্তান তার  বাবার ও স্ত্রী তার স্বামীর সম্পত্তিতে  একজন উত্তরাধিকার হিসেবে পরিপূর্ণ অধিকার লাভ করবে।

১৯৭৫ সালে মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) বিধিমালাতে রেজিস্ট্রি করার আগে কাজিকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। পুর্ণাঙ্গ বিয়ের সব সব শর্ত পুরণ হচ্ছে কিনা তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাকে দেখতে হবে। বিয়েতে বর এবং কনের পূর্ণ সম্মতি রয়েছে কিনা, তারা প্রাপ্তবয়স্ক কিনা, উপযুক্ত সাক্ষী উপস্থিত আছে কিনা, কাবিন নামার ১৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী স্ত্রীকে তালাক দেবার অধিকার প্রদান করা হয়েছে কি না, নিকাহনামার প্রতিটি ঘর পূরণ করা হয়েছে কিনা ইত্যাদি দেখবেন।

মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য কাজি দায়ি নন। তবে তাকে অবশ্যই যাচাই করতে হবে  যে, তথ্যগুলোর কোথাও কোনো অসামঞ্জস্যতা আছে কিনা যা পরবর্তীতে কারো অধিকার খর্ব করে। যেমন ছেলে বা মেয়ের বয়স নির্ধারণ এর ক্ষেত্রে তিনি জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট দেখতে চাইবেন। কাজি যদি ইচ্ছাকৃত কোনো ভুল করেন অথবা নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে  পালন না করেন বা দায়িত্বে অবহেলা করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক বা জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করা যাবে।

নিকাহ্নামা  বিয়ের একমাত্র লিখিত প্রামান্য দলিল। বিয়ে সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় এর প্রয়োজন হয়। বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণার সবচেয়ে বেশি শিকার হন নারীরা। রেজিস্ট্রেশন না করার ফলে অনেক ক্ষেত্রে বিয়েটি অস্বীকার করা হয়। সন্তানের পিতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। স্ত্রী ও সন্তানকে ভরণপোষণ দেয়া বন্ধ করে দিলে, স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে আরেকটি বিয়ে করলে বা স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেনমোহর থেকে বঞ্চিত করলে বা প্রতারণা করে বিবাহিত থাকা অবস্থায় আর কাউকে বিয়ে করলে স্ত্রীর জন্য বিয়েটি আদালতে প্রমাণ করা অত্যন্ত কষ্টসাপেক্ষ হয়ে পড়ে। তাছাড়া রেজিস্ট্রেশন না করার ফলে অনেক বাল্যবিবাহ সংঘটিত হয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে স্ত্রী আদালতে কোন নালিশ করতে চাইলে প্রথমেই বিয়ের প্রমাণ হিসাবে রেজিস্ট্রিকৃত নিকাহনামা আদালতে জমা দিতে হয়।

কেউ নিজের বিয়ে ইচ্ছামতো অস্বীকার করলে বা সন্তানের পিতৃ পরিচয় অস্বীকার করতে চাইলে, বা সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চাইলে, বিয়ে রেজিস্ট্রি করে রাখলে তা করা সম্ভব হয় না।

অনেক নারীকে দেখেছি যারা ধর্মীয় আইন মেনে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বিয়ে করেছেন। পরবর্তীতে স্বামী বিয়েটি অস্বীকার করেছেন এবং তাঁকে দেনমোহর, ভরণপোষণসহ সমস্ত আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। সামাজিকভাবেও তাকে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়েছে। সন্তানের পিতার পরিচয় এর দাবিতে আদালতের বারান্দায় বিচারের অপেক্ষায় বছরের পর বছর ধর্না দিয়েছেন অনেক নারী। স্বামীর মৃত্যুর পর জানতে পেরেছেন অন্য জেলায় অবস্থান করা তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী সন্তানদের কথা গোপন করে তাকে বিয়ে করা হয়েছে। কাজের নামে তার স্বামী অন্য জেলায় বসবাস করতেন। কিন্তু কাবিননামা না থাকায় উত্তরাধিকারের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আদালতের দ্বারে দ্বারে বিচারের আশায় ঘুরে বেরিয়েছেন। পুরুষশাসিত সমাজ নারীকে কেবল ‘নারী’ হিসেবে গণ্য করে এসেছে, ‘মানুষ’ হিসেবে নয়। সমাজে তাকে বিবেচনা করা হয় ভোগ্যপণ্য কিংবা মনোরঞ্জনের সামগ্রী হিসেবে, পরিবারে শুধুই সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র হিসেবে, যুদ্ধক্ষেত্রে লুটের মাল হিসেবে। এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করতে সমাজ, রাষ্ট্রীয় আইন, পরিবার এমনকি নারীকেও ব্যবহার করা হয়েছে যুগে যুগে।

বিয়ের রেজিস্ট্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ  একটি বিষয় যা সম্পর্কে প্রত্যেকটি নারীকে সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে সকল বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। দেনমোহর, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের পিতৃত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রিকৃত কাবিননামা একটি আইনগত দলিল। সেই সাথে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বিয়ের বৈধতা নিয়ে কোন সংশয় নেই, তবে এর অভাবে একজন নারীর ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি। তাই এই আইন সম্পর্কে জানা এবং আইন মেনে চললে অনেক ধরনের জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

Marriage registration

Marriage registration

Marriage registration

Marriage registration , privacy, tor, personally identifiable information, data, technology, legal, political, software, fraud, marketing, email, expectation of privacy, computer security, data security, information security, i2p, computer hardware, personal information,

Article