Published by | BBC News | February 22, 2021 (Link Here)
বাংলাদেশে বিয়ে ও তালাক নিবন্ধনের তথ্য ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে তিনটি মন্ত্রণালয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বিয়ে এবং তালাক নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হলেও এগুলো ডিজিটাল না করার কারণে নানা ধরণের প্রতারণামূলক ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ উঠছে।
আর এ কারণেই এসব তথ্য ডিজিটালাইজড করার নির্দেশনা চেয়ে আইনি নোটিশটি পাঠানো হয় ।
আইনজীবী ইশরাত হাসান, এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন এবং তিন জন ভুক্তভোগীর পক্ষে এই আইনি নোটিশটি আইন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হয়েছে।
যাদের পক্ষ থেকে আইনি নোটিশটি পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে একজন রাকিব হাসান। যিনি সম্প্রতি বাংলাদেশের একজন ক্রিকেটারের সদ্যবিবাহিত স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন।
তিনি অভিযোগ তুলেছেন যে, তার স্ত্রী তাকে তালাক না দিয়েই ওই ক্রিকেটারকে বিয়ে করেছেন।
“একটি সংগঠন ছাড়াও যে তিন জন রয়েছেন তারা বলেছেন যে তারা ভুক্তভোগী। এর মধ্যে রাকিব হাসানও রয়েছেন,” তিনি বলেন।
“তিনি দাবি করছেন যে, তিনি থাকা অবস্থাতেই তার স্ত্রী আবার বিয়ে করেছেন।”
এ বিষয়ে আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ভুক্তভোগী যে তিন ব্যক্তি রয়েছেন তাদের সবারই বিয়ে সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় নথি তিনি দেখেছেন এবং সেগুলো সঠিক বলে মনে হয়েছে তার কাছে।
আইনি নোটিশ সম্পর্কে তিনি জানান, এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেয়া না হলে এ বিষয়ে একটি রিট দায়ের করা হবে।
“তিন দিনের মধ্যে ডিজিটালাইজড সম্পন্ন করা না হোক – অন্তত বলা হোক যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে,” – বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিয়ে ও তালাকের জন্য একটি এলাকায় একজন রেজিস্ট্রার বা কাজী থাকেন।
“কিন্তু ওই এলাকার কেউ যদি অন্য এলাকায় গিয়ে আগের বিয়ের কথা গোপন করে বিয়ে করেন তাহলে নতুন এলাকার কাজীর পক্ষে জানা সম্ভব হয় না যে তিনি আগে বিবাহিত ছিলেন কিনা।”
বাংলাদেশের ফৌজদারি আইনে তথ্য গোপন করে একাধিক বিয়ে একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।
কিন্তু তথ্য না জানার কারণে এই শাস্তি নিশ্চিত করাও সম্ভব হয় না বলে জানান তিনি। এছাড়াও সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়েও জটিলতা তৈরি হতে পারে।
“এক ব্যক্তির ২৮৬টি বিয়ে”
এ কারণে অনেকেই বিয়ে সম্পর্কিত নানা ধরণের প্রতারণা করে পার পেয়ে যাচ্ছেন, বলছেন ইশরাত হাসান।
তিনি ২০১৯ সালের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন।
২০১৯ সালের নভেম্বরের শেষদিকে ঢাকার তেজগাঁও থানার পুলিশ জাকির হোসেন ব্যাপারি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন, যিনি তথ্য-পরিচয় গোপন করে, প্রতারণা করে ২৮৬টি বিয়ে করেছেন বলে জানা যায়।
বিয়ে ও রেজিস্ট্রেশনের তথ্য ডিজিটালাইজড করা হলে তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে বিয়ে সম্পর্কিত প্রতারণার ঘটনা কমানো সম্ভব বলে মনে করেন এই আইনজীবী।
“ডিজিটালাইজড করা হলে একজনের একটা বিয়ে থাকা অবস্থায় যতক্ষণ সেটার ডিভোর্স না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত না জানিয়ে কেউ আরেকটি বিয়ে করতে পারবে না,” বলেন তিনি।
‘যাচাই করাটা জটিল প্রক্রিয়া’
বাংলাদেশে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক বিবাহিত কিনা সেটি যাচাই করাটা বেশ কঠিন এবং জটিল প্রক্রিয়া বলে মত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিতি সানজানা।
তিনি বলেন, কেউ বিবাহিত কিনা সেটি জানতে হলে কোন কাজী অফিসে বিয়েটি সম্পন্ন হয়েছে এবং কাবিন নামার বিস্তারিত তথ্য জানা থাকতে হবে।
“যাচাই করতে গেলেও নিকাহনামাতে যে সমস্ত তথ্য রয়েছে যেমন নাম, ঠিকানা এবিষয়গুলো দিয়ে যদি কাজী অফিসে ইনকোয়ারি করা হয় তাহলে সেক্ষেত্রে জানা সম্ভব।”
তবে এক্ষেত্রে আরো একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে জানান তিনি।
সেটি হচ্ছে – বাংলাদেশে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক হলেও রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বা ধর্মীয় আচার মেনে বিয়েকেও অবৈধ বলে ধরা হয় না। সেক্ষেত্রে কোন নথি না থাকায় যাচাই করা সম্ভব হয় না বলেও জানান তিনি।
এখনো বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অনেক বিয়ে হয়ে থাকে বলে জানান তিনি। এক্ষেত্রে যদি কেউ তথ্য গোপন করে প্রতারণা করে তাহলে সেটি জানা সম্ভব হয় না।
“যাচাই করার প্রক্রিয়াটিও জটিল,” বলেন মিতি সানজানা।
“ঝুঁকি রয়েছে”
বাংলাদেশে বিয়ে গোপন করে প্রতারণার ঘটনা বাড়ছে বলে জানান আইনজীবী মিতি সানজানা।
এ ধরণের প্রতারণা রুখতে বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশনের তথ্য ডিজিটালাইজেশন একটি ভাল উপায় হতে পারেন বলেও মনে করেন তিনি।
তবে এক্ষেত্রে যদি এসব তথ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় তাহলে সেখানেও “ঝুঁকি রয়েছে” – বলে জানান তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, বিয়ে ও তালাকের মতো বিষয়গুলো মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়। আর তাই এগুলো ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারের অধীনেই পরে।
সেক্ষেত্রে এসব তথ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হলে সেগুলোও নানা ধরণের অপরাধের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আর তাই বিয়ে ও রেজিস্ট্রেশনের বিষয়গুলো ডিজিটালাইজড করা হলেও কিছু নিয়ম মেনে করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
“তথ্যগুলোতে শুধু কাজী বা রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাদের প্রবেশাধিকার থাকা উচিত।”
কেউ যদি এসব তথ্য যাচাই করতে চায় তাহলে একটি নির্ধারিত ফি পরিশোধের মাধ্যমে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে কেবল নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তথ্য জানার ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করেন তিন
Muslim Marriages and Divorces (Registration) Act-1974, Divorce law, Divorce, Muslim Marriage Registration, Bangladesh, Kabinnama, Nikahnama
Drop Your Queries
Dhaka Office
Chattogram Office
Dhaka Office Map
Chattogram Office Map