Published by The Daily Prothom Alo July 15, 2020. (Link Here)
পাঠ কে র প্রশ্ন : আ ইন

পাঠকের প্রশ্ন বিভাগে আইনগত সমস্যা নিয়ে নানা রকমের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন পাঠকেরা। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এবার।

মিতি সানজানা

প্রশ্ন : আমার স্ত্রী আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে। সে আলাদা থাকতে চায়। আমাদের তিনজন সন্তান আছে। তাদের বয়স ১৩, ১০ ও ৫ বছরের। আমি একটা সরকারি চাকরি করি। এর আগে সে দুবার চলে গিয়েছিল, তার মা-বাবা আবার ফিরিয়ে দিয়ে গেছেন। আমিও সন্তানদের কথা ভেবে চুপ ছিলাম। বুঝিয়েছি, আমার বাড়ির লােকজন এখনাে কিছু জানে না। এখন সে বলে, তালাক না দিলে আবার পালিয়ে যাবে। আমি সন্তানদের আমার কাছে রাখতে চাই। আমার এখন কী করার আছে?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

| রাজশাহী উত্তর : যেহেতু সে আপনার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক রাখতে চাইছে না, সে ক্ষেত্রে আপনি জোর । করে এই বিয়ে টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। পারিবারিক আইনের আওতায় প্রায় সব ধর্মের অাইনেই পিতা সন্তানের প্রকৃত আইনগত অভিভাবক। সাধারণত সব ধর্মেই পিতা-মাতার বিচ্ছেদ বা যেকোনাে একজনের মৃত্যুর পরই অভিভাবকত্বের প্রশ্নটি আসে।।

মুসলিম পারিবারিক আইনে সন্তানের তিন ধরনের অভিভাবকত্বের কথা বলা আছে। সেগুলাে হলাে সন্তানের অভিভাবকত্ব, সন্তানের সম্পত্তির অভিভাবকত্ব এবং সন্তানের বিয়ের অভিভাবকত্ব।

মুসলিম আইনে শিশুসন্তানের দেখাশােনার বিষয়ে (জিম্মাদারের ক্ষেত্রে) সবচেয়ে বড় অধিকারী হলেন মা। তিনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সন্তানের জিম্মাদার হয়ে থাকেন, কিন্তু কখনাে অভিভাবক হতে পারেন না। | এই জিম্মাদারির সময়কাল হলাে ছেলেসন্তানের ক্ষেত্রে সাত বছর, মেয়েসন্তানের ক্ষেত্রে। বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত।

তবে নাবালকের কল্যাণেই নির্দিষ্ট বয়সের পরেও মায়ের জিম্মাদারিত্বে সন্তান থাকতে পারে। যদি আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয় যে সন্তান মায়ের কাছে থাকলে তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ স্বাভাবিক হবে, সন্তানের কল্যাণ হবে এবং স্বার্থ রক্ষা হবে—সে ক্ষেত্রে আদালত মাকে ওই বয়সের পরেও সন্তানের জিম্মাদার হিসেবে নিয়ােগ করতে পারেন।

নাবালক সন্তানের ভরণপােষণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য ব্যাপারে নৈতিক ও অর্থনৈতিক সব সুবিধা প্রদান করা একজন অভিভাবকের দায়িত্ব। প্রচলিত একটি ধারণা রয়েছে, মা পুনরায় বিয়ে করলে নাবালক সন্তানের জিম্মার অধিকার হারান। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে আদালত অবস্থা বিবেচনা করে নাবালককে তার মায়ের পুনর্বিবাহের পরেও তাঁর জিম্মায় রাখার আদেশ দিতে পারেন। কাজেই বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের ব্যাপার। আপনার সন্তানেরা ছেলে না মেয়ে সেটি উল্লেখ করেননি। তবে যার বয়স পঁচি, সে তার মায়ের জিম্মায় থাকবে। অদিলিত সন্তানের কল্যাণের বিষয়টি আমলে নিয়ে নির্ধারণ করবেন সন্তানেরা কার কাছে থাকবে।

প্রশ্ন : দুই নামে জমির দলিল থাকলে একজনের অংশ কীভাবে বিক্রি করা যাবে?

সুজন সরদার

কিশােরগঞ্জ উত্তর : দুজনের নামে সম্পত্তি থাকলে এই সম্পত্তি বিভাজন করতে হবে। একটি আপস বণ্টননামা দলিল করে সেটা রেজিষ্ট্রি করে যার যার নামে নামজারি করা হলে, যার যার নিজের অংশ হস্তান্তর করতে পারবেন।