Dhaka: +88028835174-6; Chattogram: +88 09678 677 688

BARRISTERS | ADVOCATES | LEGAL CONSULTANTS

স্ত্রী আমাকে আর শান্তি দিচ্ছে না

Wife is not letting me be in peace

Published by Prothom Alo | October 26, 2022  (Link Here)

Wife is not letting me be in peace – প্রশ্ন: আমার বিয়ে হয়েছে সাত বছর। পাঁচ বছরের একটা ছেলে আছে। ছেলে হওয়ার পর থেকে আমার স্ত্রী তার বড় ভাইয়ের বাসায় থাকে, আমি আসা–যাওয়া করি। ছেলের সব খরচ এ পর্যন্ত আমিই দিচ্ছি। চেকের মাধ্যমে টাকা দেওয়ায় সব ধরনের প্রমাণ আমার কাছে আছে। আমার স্ত্রী আমাকে একদম সময় দেয় না, আমার অতীত জীবন নিয়ে আমাকে অমানবিক বিরক্ত করে। যে কারণে আমার শারীরিক ও মানসিক অনেক সমস্যা হচ্ছে। আমার স্ত্রী আমাকে আর শান্তি দিচ্ছে না, সুখী করতে পারছে না। এখন আমি যদি নেতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাই এবং যদি আরেকটা বিয়ে করতে চাই তাহলে আমার কি কোনোরকম হয়রানি হওয়ার আশঙ্কা আছে? দেনমোহরের পুরোটাই বিয়ের সময়েই পরিশোধ করা হয়েছে। পরামর্শ পেলে উপকৃত হতাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

উত্তর: আপনার প্রশ্ন থেকে বুঝতে পারছি, আপনার স্ত্রী পাঁচ বছর ধরে তাঁর ভাইয়ের বাসায় অবস্থান করছেন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বিয়ের পর স্ত্রী বাবার বাড়িতে এসে স্বামীর সংসারে ফিরতে চান না। কোনো স্ত্রী যদি সংগত কারণ ছাড়া স্বামীর সঙ্গে বসবাস বন্ধ করে দেন, সে ক্ষেত্রে দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন স্বামী।

দাম্পত্য অধিকার পুনঃ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আদালতের বিবেচনামূলক ক্ষমতার মধ্যে পড়ে। এ ক্ষেত্রে আপনি যদি মামলাটি করেন, তবে অবশ্যই আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে আপনি স্বচ্ছ মনোভাব নিয়েই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রমাণ করতে হবে যে আপনার স্ত্রী কোনো কারণ ছাড়াই সংসারে ফিরতে চান না।

আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বলছি, আইন অনুযায়ী এক স্ত্রী বর্তমানে আরেকটি বা একাধিক বিয়ে করাকে বহুবিবাহ বলে। কোনো ব্যক্তির যদি এক স্ত্রী বর্তমান থাকতে আরেকটি বিয়ে করার প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি বর্তমান স্ত্রীর এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে আরেকটি বিয়ে করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে পারবেন।

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১-এর ৬ ধারামতে, দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সালিসি পরিষদের কাছে অনুমতি না নিলে বিয়ে নিবন্ধন হবে না। অনুমতির জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিয়ের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা হবে—

১. বর্তমান স্ত্রীর বন্ধ্যত্ব।

২. শারীরিক মারাত্মক দুর্বলতা।

৩. দাম্পত্য–সম্পর্কিত শারীরিক অযোগ্যতা।

৪. দাম্পত্য অধিকার পুনর্বহালের জন্য আদালত থেকে প্রদত্ত কোনো আদেশ বা ডিক্রি বর্জন।

৫. মানসিক অসুস্থতা ইত্যাদি।

আপনি যদি সালিসি পরিষদের অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করেন, তবে অবিলম্বে বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীদের আশু বা বিলম্বিত দেনমোহরের সম্পূর্ণ টাকা সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধ করতে হবে। বর্তমান স্ত্রী সে ক্ষেত্রে আদালতে মামলা করে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করার অধিকার রাখেন। দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে প্রথম স্ত্রী আলাদা বসবাস করার সিদ্ধান্ত নিলেও তিনি ভরণপোষণ পাবেন। এ ক্ষেত্রে নাবালক সন্তানদের ভরণপোষণও বাবাকেই দিতে হবে। পাশাপাশি স্ত্রী ও সন্তানদের উত্তরাধিকারের অধিকার কোনো অবস্থাতেই খর্ব হবে না।

এ ছাড়া অনুমতি না নেওয়ার অভিযোগে স্বামী দোষী সাব্যস্ত হলে এক বছর পর্যন্ত জেল ও ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

তবে আপনি যদি মনে করেন কোনোভাবেই এই বিয়ে আর টিকিয়ে রাখা সম্ভব না, যেমনটা আপনি লিখেছেন, সে ক্ষেত্রে তালাকও দিতে পারেন।

তালাক দেওয়ার বিষয়ে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনে বলা হয়েছে যে তালাক দিতে চাইলে তালাক ঘোষণার পর, অপর পক্ষ যে এলাকায় বসবাস করছেন, সে এলাকার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান/পৌর মেয়র/সিটি করপোরেশন মেয়রকে লিখিতভাবে তালাকের নোটিশ দিতে হবে। সেই সঙ্গে তালাকগ্রহীতাকে উক্ত নোটিশের নকল প্রদান করতে হবে। নোটিশ পাঠানোর কাজটি ডাকযোগেও হতে পারে, আবার সরাসরিও হতে পারে। ডাকযোগে রেজিস্ট্রি করে এডিসহযোগে পাঠালে ভালো হয়।

চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে যে তারিখে নোটিশ পৌঁছাবে, সেদিন থেকে ৯০ দিন পর বিবাহবিচ্ছেদ বা তালাক কার্যকর হবে। এ নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সালিসি পরিষদ গঠন করে সমঝোতার উদ্যোগ নিতে হবে। সালিসের কোনো উদ্যোগ না নেওয়া হলেও তালাক কার্যকর বলে গণ্য হবে। তবে স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে গর্ভকাল শেষ হওয়ার পর তালাক কার্যকর হবে।

যে পক্ষই তালাক প্রদান করুক না কেন, তালাক কার্যকরের পর তালাকটি যে কাজির মাধ্যমে নোটিশ সম্পন্ন করা হয়েছে, সে কাজি অফিসে নিবন্ধন করাতে হবে। তালাক নিবন্ধন করা আইনত বাধ্যতামূলক। আপনি ইতিমধ্যে আপনার স্ত্রীর দেনমোহর পরিশোধ করেছেন। কাজেই তাঁকে ইদ্দতকালীন ভরণপোষণ ছাড়া আর কিছু দিতে হবে না। তবে যেকোনো ক্ষেত্রেই আপনার সন্তান সাবালক না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে তাঁর ভরণপোষণ দিতে হবে। আর এ বিষয়ে অবশ্যই একজন আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে নিলে আপনার জন্য ভালো হবে।

Wife is not letting me be in peace

Wife is not letting me be in peace

Wife is not letting me be in peace

Article